রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক।।
খেলা দেখতে হলে বিশ্বকাপ দেখব। দিদির খেলা কেন দেখব? এমনই প্রশ্ন তুলে তৃণমূলকে বিধঁলেন বিজেপির বরানগর বিধানসভার প্রার্থী টলিউডের অভিনেত্রী পার্নো মিত্র। তার সাফ কথা, ‘আমি নতুন সমাজের সাক্ষী হতে চাই। পরিবর্তন আনতে চাই। শুধু সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, কলকাতার রাস্তায়, জেলায় জেলায় গিয়ে কাজ করব।’
গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েই বরানগরের প্রার্থী। তাও আবার তৃণমূলের হেভিওয়েট নেতা তাপস রায়ের বিরুদ্ধে। কিন্তু তা নিয়ে একদম চিন্তিত নন পার্নো। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে প্রার্থী হওয়ার কোনও খবরই ছিল না। আমার কাছে এটা বিগ সারপ্রাইজ। এটা শুধু শক্ত আসনই নয়। রাজনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটা সময় এই বরানগর থেকে বিধায়ক হয়েছিলেন রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুও। এমন একটা আসনে আমি জিততে পারব বলে দল মনে করছে। এটাই আমাকে আত্মবিশ্বাস যোগাচ্ছে, শক্তি দিচ্ছে। আমার বিরোধী প্রার্থী অনেক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মানছি। কিন্তু আমি নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি। মানুষের জন্য কাজ করাটাই আমার লক্ষ্য। মানুষের ভালবাসা দিয়েই আমি এ লড়াই জিতব।’
তৃণমূলের সমলোচনা করে পার্নো বলেন, ‘রাজ্যে চাকরি নেই, শিল্প নেই। যখন পরিবর্তন এলো তখন সবাই আশা করেছিলাম এবার শিল্প আসবে, পরিকাঠামো নির্মাণ হবে। উন্নতি হবে শিক্ষা, স্বাস্থ্যের। কিন্তু বদলে আমরা পেলাম শুধুই মিথ্যা আশা, দুর্নীতি। আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা পুরো ভেঙে গিয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থার কোনও উন্নতিই হয়নি। দিদির সরকার শুধু নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়েছে। সাধারণ মানুষের পরোয়া না করে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যুদ্ধে নেমেছে। ’
পার্নো বলেন, ‘আমার কাজ মানুষকে ভালবাসা দেওয়া। ভোটের বাকি কাজ দলের কর্মকর্তার সাংগঠনিকভাবে ঠিক করবেন। ভোট করবে আমাদের বিজেপি দল। আমি রূপোলি পর্দার মানুষ, সেখানে মানুষ আমায় ভালোবাসা দিয়েছেন, এবার সেই ভালোবাসাই মানুষকে আমি ফিরিয়ে দিতে চাই। আমার প্রজন্মের লোকেরা এগিয়ে আসছে। তারা পরিবর্তন চান। সহকর্মীদের সাফল্যে আমি খুশি। ঠান্ডা ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপ্লব করলে পরিবর্তন আসবে না। সে জন্য পথে নামতে হবে। এরপর সময় বলবে। পরিবর্তন চাইলে নিজেকেই তা আনতে হয়।’
লড়াই কঠিন স্বীকার করে পার্নোর দাবি, ‘আমার লড়াই নিশ্চই কঠিন হবে। কিন্তু আমি যেখান থেকেই দাঁড়াতাম সেটাই কঠিন হতো। আমরা মতো নতুন রাজনীতিতে এসেছি, তাদের কাছে সব আসনই কঠিন। কারণ এটা আমাদের প্রথমবার, তাই ওই ভয় পেয়ে লাভ নেই। আর দল যখন আমায় যোগ্য মনে করেছেন এই আসনের জন্য, নিশ্চয়ই কিছু একটা ভেবে করেছে। সেটাই সাহস দিচ্ছে। আমি মানুষের পাশে থাকতে চাই, মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমি জানি, সবাই একথা বলছে। কিন্তু আমি সত্যিই থাকতে চাই। বরানগরের মানুষদের ব্যক্তিগতভাবে চিনতে চাই। আমি ২০০ শতাংশ দিয়ে কাজ করব। আমি ভোট তো ছিনিয়ে নিতে পারব না, শুধু ভালাবাসা দিয়ে মানুষকে কাছে টানব।’
বরানগরের মানুষের সমস্যা জানা এবং তার সমাধান করার দিকে বিধায়ক হলে প্রথমেই জোর দিতে চান পার্নো। তিনি বলেন, ‘দশ বছরে পরিবর্তন কিছুই হয়নি। এখন আবার স্লোগান বদলে গেছে, বলছে খেলা হবে। কিন্তু আমরা তো খেলা দেখতে চাই না। খেলা দেখতে হলে বিশ্বকাপ দেখব, ভারতের খেলা দেখব, বিরাট কোহলিকে দেখব। ভোটের খেলা কেন দেখব? আমার মনে হয়, এটা উন্নয়নের সময়। আসল পরিবর্তন আসার সময় এসে গেছে, সেটাতেই মন দিতে হবে। ভোট দেওয়ার পর আমি জিতলে সবাই আশা করবে আমি তাদের সঙ্গে থেকে কাজ করব। আমি তাদের দুঃখ দিতে চাই না। আমি তাদের মতো হতে চাই না, যাদের ভোটে জেতার পর টিকি খুঁজে পাওয়া যায় না। আমিও তো একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে। আমিও ভোট দিয়েছি, প্রয়োজনে নেতাদের পাশে পাইনি। সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি, অসুবিধে হয়েছে। তাই আমি সেই অভিযোগ শুনতে চাই না। আমি সুখে, দুঃখে, আনন্দে বরানগরের মানুষের পাশে থাকতে চাই, আর আমি তা করব।’